দূষন

দূষণ নিয়ন্ত্রনে ধূঁকছে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প

হয় অস্তিত্বহীন, না হয় অপর্যাপ্ত কিংবা অব্যবহৃত ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নিয়ে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প প্রকৃতিতে দূষিত বর্জ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে
বাংলা
<p>ঢাকার পানিতে মিশে যাচ্ছে কল-কারখানার অপরিশোধিত বর্জ্য। শিল্প বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকার গাজীপুরের শিল্পাঞ্চলে ২,২২০টি কারখানার মধ্যে মাত্র ৫৫৬টিতে বর্জ্য শোধনাগার রয়েছে। এর মধ্যে ১% এরও কম কারখানা বর্জ্য শোধনাগারগুলো ব্যবহার বা রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে । (ছবি: ESDO)</p>

ঢাকার পানিতে মিশে যাচ্ছে কল-কারখানার অপরিশোধিত বর্জ্য। শিল্প বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকার গাজীপুরের শিল্পাঞ্চলে ২,২২০টি কারখানার মধ্যে মাত্র ৫৫৬টিতে বর্জ্য শোধনাগার রয়েছে। এর মধ্যে ১% এরও কম কারখানা বর্জ্য শোধনাগারগুলো ব্যবহার বা রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে । (ছবি: ESDO)

আশফিক মোহাম্মদ খালিদ একজন ধনী কৃষক। অথচ বছরের পর বছর ধরে তিনি তার জমিতে লোকসান দিয়ে আসছেন।  ফসল কাটার মৌসুমে পরিপক্ক হবার আগেই গোড়ার দিক থেকে পচে যায়  তার জমিতে রোপন করা ফসল।

বালু নদীর তীরে বাংলাদেশের গাজীপুর জেলায় শফিকসহ অন্যান্য অনেক কৃষকের জন্য এখন চাষাবাদ বড্ড কঠিন হয়ে পড়েছে। ঢাকার ঠিক উত্তরে গাজীপুর জেলাটি তৈরি পোশাক শিল্প কারখানার একটি কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে। আর এর মধ্য দিয়ে  আশপাশের নদীগুলোতে শিল্প কারখানা নি:সৃত দূষণ এখন চরমে এসে পৌঁছেছে।

স্থানীয় কৃষকদের দাবি, আশেপাশের পোশাক কারখানা থেকে নির্বিচারে বর্জ্য নির্গত হওয়ার ফলে এলাকার কৃষিজমিগুলো কালো আলকাতরায় পরিণত হয়েছে, আর সেই সাথে স্থানীয়দের জন্য এটি এখন  দীর্ঘমেয়াদী চর্মরোগের কারণ হয়েছে।

“আমি সারা শরীরে চুলকানির সমস্যায় ভুগছি এবং আমার হাতে ঘা তৈরি হয়েছে, কারণ আমাকে আমার ধানক্ষেতে কাজ করতে হয়,” খালিদ দ্য থার্ড পোলকে বলেন।

“আসলে আমরা চাষীরা যখন ফসল চাষের জন্য জমিতে কোদাল দেই, তখন মনে হয় আমরা আলকাতরাযুক্ত মাটিতে খনন করছি। এই নদীতে মাছ নেই, কারণ কারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত বর্জ্য নদীর পানিকে দূষিত করছে, আর এই দূষণ সৃষ্টি হচ্ছে পোশাক কারখানা থেকে নির্গত বর্জ্যের কারনে।”

৩৫ বছর বয়সী খালিদ আরো বলেন,  আমাদের এলাকায় সূপেয় পানিরও  তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে।

নদী দূষণ

টেক্সটাইল বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প। এই খাত থেকে ২০২১ সালের জুলাই ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত রপ্তানি করা মোট ৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিটওয়্যার এবং অন্যান্য পোশাক রয়েছে। গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং সাভারে বেশিরভাগ পোশাক কারখানা স্থাপন করা হয়েছে, যে জেলাগুলো ঢাকার মেট্রোপলিটন এলাকার অধীনে।

ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পুলিশের তথ্য মতে, গাজীপুরের মোট ২,২২০টি কারখানার মধ্যে, ১,২২২টি তৈরি পোশাক কারখানা যা প্রায় ১.৬ মিলিয়ন মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করেছে।

Garbage and untreated waste in Dhaka
অপরিশোধিত শিল্প বর্জ্য ঢাকার চারপাশে থাকা এই জলপথে ছেড়ে দেয়া হয় (ছবি: ESDO)

বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনির হোসেন অবশ্য দ্য থার্ড পোলকে বলেন, কাগজে কলমে মাত্র ৫৫৬টি কারখানায় বর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি) রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৮টি কারখানা ইন্টার প্রসেস কমিউনিকেশন ক্যামেরা স্থাপন করেছে, যার মাধ্যমে পরিবেশ অধিদপ্তর দূর থেকে ইটিপিগুলো পর্যবেক্ষণ করতে পারে।

এই অঞ্চলে লাবান্ধা নদীটি শিল্প দূষণের অন্যতম শিকার, কারণ এর পাশে প্রায় ৫০০টি কারখানা রয়েছে। গাজীপুর ও শ্রীপুর শহরের শিল্পবর্জ্য লাবান্ধা থেকে তুরাগে গিয়ে পড়ে। তারপর মিরপুরে গিয়ে ঢাকার প্রধান বুড়িগঙ্গা নদীতে মিলিত হয়।

মনির হোসেনের প্রশ্ন – দি ইটিপিগুলি [কারখানা] মালিকদের দাবির মতোই দক্ষ হয়, তাহলে কীভাবে এই নদীগুলি এত পরিমানে দূষিত হচ্ছে যে এমনকি আশেপাশের কৃষি জমিগুলিও কালো হয়ে যাচ্ছে?

অন্যান্য বেশ কয়েকটি গবেষণা সংস্থার সহযোগিতায় মনির হোসেনের সংস্থা শিল্প এলাকায় ১৪৯টি নদীতে জরিপকার্য পরিচালনা করে এগুলোতে দূষণের উদ্বেগজনক মাত্রা খুঁজে পায়। এতে দেখা যায় যে পরিবেশ রক্ষায় এই ইটিপিগুলো বলতে গেলে কােনা ভূমিকাই রাখতে পারছে না।

তিনি বলেন, আইনী নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও তৈরি পোশাক শিল্পের সাথে যুক্ত ধোয়া ও রঙ করার কারখানাসহ আশেপাশের অনেক সিমেন্ট ও ওষুধ প্রস্তুতকারী কারখানাগুলো থেকে নির্বিচারে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, ধলেশ্বরী ও বালু নদীতে বর্জ্য ফেলা হয়।

মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং ভারী ধাতু

বাংলাদেশের স্থানীয় একটি বেসরকারী সংগঠন পরিবেশ ও সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার (ESDO) মহাসচিব শাহরিয়ার হোসেন বলেন, বিশ্বব্যাপী উৎপাদিত সমস্ত টেক্সটাইল পণ্যের মধ্যে ৬৫ শতাংশ পন্যই সিন্থেটিক ফাইবার থেকে তৈরি হয়। সিন্থেটিক ফাইবার থেকে প্লাস্টিকের ছোট ছোট টুকরো বর্জ্য আকারে বের হয় যার ব্যাস পাঁচ মিলিমিটারেরও কম। এই মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলি সহজে ভাঙ্গে না এবং শত শত বছর ধরে এগুলো পরিবেশে থাকতে পারে। এগুলি প্রায়শই সামুদ্রিক প্রাণীরা খাবার ভেবে ভুল করে গ্রহন করে থাকে।

সাম্প্রতিক সময়ে পরিচালিত বেশ কয়েকটি গবেষণায় এই সমস্যাটির চিত্র প্রকট আকারে উঠে এসেছে। ২০২২ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টগুলি গড়ে ৬২% মাইক্রোপ্লাস্টিক অপসারণ করছে। এর অর্থ হচ্ছে কার্যকর ইটিপিগুলো ব্যবহৃত হবার পরেও এক্স-রে, ওয়াশিং, ফার্মাসিউটিক্যালস, ব্যাটারি এবং মুদ্রণ শিল্প দ্বারা উৎপন্ন মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলির কমপক্ষে ৩৮% পরিবেশে অনায়সে ছড়িয়ে পড়ছে  এবং শেষ পর্যন্ত তা প্রবেশ করছে আমাদের খাদ্য শৃঙ্খলে।

Industrial and household waste dumped in Dhaka waterbodies
ঢাকার জলাশয়ে শিল্প ও গৃহস্থালির বর্জ্য। ছবি: মোহাম্মদ তারেক)

জানুয়ারিতে প্রকাশিত অপর এক গবেষণায় দেখা গেছে বুড়িগঙ্গা নদীর পানি, পলি, মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীতে যথেষ্ট মাইক্রোপ্লাস্টিক রয়েছে।

এদিকে গত বছরের মে মাসে, একটি সমীক্ষায় বলা হয় যে ঢাকার জলাশয়গুলো “মারাত্বকভাবে দূষিত”। এতে আরো বলা হয়,  “ধলেশ্বরী, বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা এবং বালু নদীর পানি দৃশ্যত কালো রঙ ধারণ করেছে এবং গবেষনা দলগুলো পরিদর্শন করার সময় নদীর পানি থেকে তীব্র গন্ধ অনুভব করেন।  এসব জলাশয়ের পানিতে উচ্চ মাত্রার জৈব দূষণ থেকে ভারী ধাতুর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এই ভারী ধাতুগুলি খোলা জমি  ভূপৃষ্ঠ এবং ভূগর্ভস্থ পানিতে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে প্রচলিত মাধ্যম হিসেবে খোলা জমিতে বর্জ্য পুতে দেয়া হয়।

গবেষকরা মনে করেন ধলেশ্বরী, বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ এবং টঙ্গী নদী “মারাত্মকভাবে দূষিত” এবং এসব নদীর পানি সেচের জন্য মোটেই ব্যবহার করা উচিত নয়।

Sবাংলাদেশের ইটিপির কার্যকারিতা নিয়ে পরিচালিত গবেষনার অন্যতম একজন গবেষক শফি মোহাম্মদ তারেক। তিনি দ্য থার্ড পোলকে বলেন, বিষাক্ত ধাতুর কারণে পানি দূষণের ফলে এই ধরনের পানি থেকে উৎপাদিত ফসল অনিরাপদ হয়ে পড়ছে। তিনি আরো বলেন, অদক্ষ চিকিৎসা ব্যবস্থার কারণে সূষ্ট দূষণের কারণে প্রকৃতি ও মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য যে অর্থনৈতিক ব্যয় হয় তা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের মুনাফার চেয়ে অনেক বেশি।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পুনর্ব্যবহার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ

ESDO-এর শাহরিয়ার হোসেনের মতে, বাংলাদেশের এক শতাংশেরও কম কারখানা তাদের ইটিপি ব্যবহার করে বা রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে। তিনি দ্য থার্ড পোলকে বলেন, কারখানার মালিকরা বেশিরভাগ সময় ইটিপিগুলি বন্ধ রাখে এবং কেবল পরিদর্শনের সময় সেগুলি চালায়। রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের (আরডিআরসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজাজ বলেন, কারখানার ভিতরে ইটিপিগুলি সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করার মতো যথেষ্ট ক্ষমতা বাংলাদেশের পরিবেশ অধিদপ্তরের নেই। আরিডআরসি মূলত নদী অববাহিকা ব্যবস্থাপনা, স্থায়িত্ব এবং ব-দ্বীপ অধ্যয়নের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কাজ করে থাকে।

দক্ষিণ ঢাকার শ্যামপুর শিল্প এলাকায় কাপড় রং করার কারখানাগুলো থেকে প্রচুর পরিমাণে তেল, গ্রিজ এবং অ্যামোনিয়া উৎপন্ন হয় যা স্থানীয় জলাশয়গুলিকে ব্যাপকভাবে দূষিত করছে। আজাজ দ্য থার্ড পোলকে বলেন, আরডিআরসি’র এক গবেষনা মতে, এসব এলাকায় বসবাসকারীরা এই পানি ব্যবহার করতে পারেন না। পাশাপাশি এই এলাকার অনেকেই বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার কথা জানিয়েছেন। জরিপে দেখা গেছে, গাজীপুরের শ্রীপুর ও শ্যামপুরে নদীর পানির দূষন কৃষিক্ষেত্রের অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে ১০ গুণ বেশি।

দ্য থার্ড পোলকে আজাজ বলেন, “যদিও [কারখানার] মালিকরা দাবী করেন যে তাদের ব্যবহৃত  পানির ১৫ শতাংশ পূনর্ব্যবহার করার সক্ষমতা রয়েছে, তবে আমাদের গবেষনা বলছে [তৈরি পোশাকের সাথে সম্পর্কিত] তারা মাত্র ২ থেকে ৩ শতাংশ পানি পূনর্ব্যবহার করতে সক্ষম।

কারখানার মালিকরা কারখানার বর্জ্য পানি পুনর্ব্যবহারের জন্য ইটিপি স্থাপনে আগ্রহী নয়
শফি মোহাম্মদ তারেক, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

শফি মোহাম্মদ তারেক ঢাকার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপক। তিনি বলেন,  টেক্সটাইল কারখানায় ব্যবহৃত পানি শোধন করার জন্য ইটিপি পরিচালনা একটি ব্যয়বহুল পদ্ধতি।

“তাই, কারখানার মালিকরা কারখানার দূষিত পানি পুনর্ব্যবহার করার জন্য ইটিপি বা অন্যান্য পদ্ধি স্থাপনে অনিচ্ছুক, এবং যে কারখানাগুলিতে ইটিপি রয়েছে তা-ও অকার্যকর পাওয়া গেছে।”  তিনি বলেন, প্রযুক্তিটি আরও উন্নত এবং সাশ্রয়ী হলে আরও স্থানীয় সংস্থাগুলি ইটিপি গ্রহণ করবে। তাই আসলে ইটিপির পরিবর্তে আবর্জনা একটি নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দেয়া একটি সহজ এবং সাধারণ অভ্যাস এখানে।

স্লাজ হচ্ছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট থেকে উৎসারিত এক ধরনের কঠিন বাই-প্রডাক্ট বা উপজাত। তারেক হোসেন বলেন, বেশিরভাগ সময়েই এই স্লাজ আশেপাশের পতিত জমিতে ফেলা হয় বা কৃষি জমিতে ফেলে রাখা হয়।  অনেক ক্ষেত্রে এসব বর্জ্য নি:সৃত উপজাত সিমেন্ট এবং ইটের ভাটায় ব্যবহার করা হয়। উদ্বেগের বিষয় হল, বর্ষাকালে এই স্লাজ বর্জ্য যেখানে ফেলা হয় সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের নদীগুলোতে।

তিনি বলেন, নানা ধরনের ভারী ধাতু স্লাজ বর্জ্যে থেকে যায়, যা ফসল দ্বারা শোষিত হয়ে মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এগুলো সেবন করলে ক্যান্সারসহ নানা রোগের কারন হতে পারে।

পরিস্থিতির কি উন্নতি হচ্ছে?

২০২২ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ঢাকা অ্যাপারেল সামিটে এই খাত সংশ্লিষ্ট অনেকেই স্বীকার করেন যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পুনর্ব্যবহার করা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তারা বলেন, ফ্যাশন শিল্পের জন্য বর্জ্য একটি বিশ্বব্যাপী  সমস্যা। আর তাই এক্ষেত্রে উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তির প্রতি আরও বেশি  মনোযোগ দেয়া উচিত যাতে পানি এবং পরিবেশ দূষণ হ্রাস করা যায়।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল স্বীকার করেন যে এই খাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পুনর্ব্যবহার করার সক্ষমতার ক্ষেত্রে কিছুটা চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

“পুনর্ব্যবহার ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে আমাদের অনেক কিছু করার আছে। তবে অত্যধিক ব্যয়ের কারণে অনেক কারাখানা মালিক বর্ধিত পুনর্ব্যবহারে যেতে চান না,” বলেন মহিউদ্দিন রুবেল।  

তবে এই চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, রুবেল দাবি করেন যে পরিবেশগত আইন, ব্যবসায়িক অবস্থার উন্নতি, ক্রেতাদের প্রয়োজনীয়তা এবং সরকারী নজরদারি ও সমর্থনের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে এই বিষয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাত এখন পরিবেশগত প্রয়োজনীয়তার বিষয়গুলো মাথায় রেখে সর্বোচ্চ করণীয়গুলো পালনে সচেষ্ট হয়েছে।

বিজিএমইএ-এর তথ্য অনুযায়ী, দেশের পোশাক খাতে বর্তমানে ১৭৮টি কারখানা রয়েছে যারা ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল থেকে লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন  সার্টিফিকেট পেয়েছে। এই রেটিং সিস্টেমটি একটি বিল্ডিংয়ের পরিবেশগত কর্মক্ষমতা নির্ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়।

অনলাইন পর্যবেক্ষণ এবং নথি জমা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে রুবেল বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে পরিবেশগত ছাড়পত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে অডিট প্রক্রিয়া এবং অটোমেশন একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া যা হেরফের করা যায় না। তিনি বলেন, এর ফলে পোশাক প্রস্তুতকারকদের উন্নত কারখানার স্থাপনে অবদান রেখে চলেছে, যেমন বাংলাদেশে ধীরে ধীরে গ্রীন ফ্যাক্টরির সংখ্যা বাড়ছে।

দ্য থার্ড পোলের পক্ষ থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুল হামিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তার বিভাগের কর্মকর্তারাও মন্তব্য করতে রাজি হননি।