icon/64x64/culture সংস্কৃতি

বাংলাদেশের যে সম্প্রদায়ের জীবন কাটে নৌকায়, মৃত্যুও সেখানেই

ভোলার সর্দার সম্প্রদায়ের বসবাস নৌকায়। নিজেরা মৎসজীবি হিসেবে মোটামুটি খেয়ে-পড়ে কোনো রকমে বেঁচে থাকলেও, সরকারের নানা সহয়তা পাওয়ার রাস্তা তাদের জন্য কন্টকাকীর্ণ

‘এই নদীই আমাদের জীবন ‘, প্রমত্তা মেঘনা নদীর দিকে তাকিয়ে নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে এভাবেই বললেন ৩৮ বছরের জোবেদা খাতুন। তার নৌকাটিই তার ঘর। স্লুইস গেটের পাশ দিয়ে বয়ে চলা ছোট্ট খালটিতে ছোট-বড় আরো ৪০টি নৌকাতে তার মতো আরো ৫০টি পরিবার  বসবাস করে। খালটি কিছু দুরে গিয়ে মেঘনা নদীর সাথে মিশেছে। নৌকায় বসবাস করা এই পরিবারগুলো বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা জেলার সদর থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দুরে এই স্লুইস গেট এলাকার ছোট্ট খালটিতে বাসবাস করে আসছে অনেক দিন থেকেই। সব মিলিয়ে এই ৫০ টি পরিবারের প্রায় ২০০ জনের অস্থায়ী নিবাস এখন এই স্লুইস গেট সংলগ্ন খাল।

স্থানীয়রা তাদের ব্যাবাইজা নামে সম্বোধন করলেও এই মৎসজীবিরা নিজেদের সর্দার সম্প্রদায় হিসেবেই অভিহিত করে থাকে। অনেকেই সর্দার সম্প্রদায়কে বেঁদে সম্প্রদায় হিসেবে বর্ণনা করার চেষ্টা করে থাকে. যেটি পুরোপুরি ভুল। মূলত বাংলাদেশে বেঁদে সম্প্রদায় হচ্ছে আরেকটি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যারা যাযাবরের মতো জীবন জাপন করে। তাদের মূল পেশা সাপ ধরা এবং সাপের খেরা দেখিয়ে জীবন ধারণ করা। অথচ ভোলার এই সর্দার জনগোষ্ঠীর মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তাদের আসলে আর কোনো পেশা ইেন। কিছু বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া নদীর বাইরে মূল ভূখন্ডে বসবাস করা মানুষের সাথে এদেও কোনো সম্পর্ক নেই। সমগ্র ভোলা জেলায় বিশেষ এই গোষ্ঠী প্রায় একশত পরিবার নিয়ে নৌকায় বসবাস করে থাকে। এদের বেশিরভাগই নদী ভাঙ্গনের শিকার। নদীর করাল গ্রাসে নিজেদের বাড়িঘর বিলীন হওয়ার পর এই নৌকাই তাদের এখন শেষ আশ্রয়।    

Sardar boat
Except for trade with land dwellers, the Sardar are strangers to the land. [Image: Md. Abdus Salam]

নারী, সম্পদের রক্ষাকারী

জোবেদার আদিবাড়ি ছিল দেশের দক্ষিণের আরেক জেলা শরিয়তপুরে। জোবেদার যখন কেবল সাত বছর বয়স, তখন নদীগর্ভে বিলীন হয় তাদের বাড়ি। এরপর থেকে এই নৌকাতেই তার জীবন। ভাসমান নৌকা বহরেই তার বেড়ে ওঠা, বৈাবাহিক সম্পর্কের শুরু আর সন্তানের জন্ম। জোবেদার স্বামীও এজকজন জেলে।

এই সম্প্রদায়ের পুরুষদের মাছ ধরাই মূল পেশা। আর নারীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘর সামাল দেয়। কোনো প্রথাগত পেশায় নিযুক্ত না থাকলে এই সম্প্রদায়ের নারীরা কিন্তু বেশ ক্ষমতায়িত। কারণ পরিবারের অল্প-বিস্তর সম্পদের ধারক কিন্তু এই নারীরাই। নদীতে যখন মাছের ভরা মৌসুম আসে তখন মাছ ধরে মহাজনদেও কাছে বিক্রি করে তারা যে অর্থ পায় তার একটি অংশ দিয়ে তারা কিছু স্বর্ণালংকার কিনে থাকে। যেহেতু নিজেদের কোনো ব্যাংক একাউন্ট নেই তাই এই স্বর্ণই তাদের সঞ্চয়। এই কাজটি এখানকার নারীরাই করে থাকেন। এখানকার বেশিরভাগ নারীরাই তাদের এই অলংকারগুলো (কানের দুল, নাক ফুল) নিজেদের নাকে, কানে একাধিক ফুটো করে পরিধান করে।  

sardar woman nomad
The women of the Sardar community carry the wealth of the community in their gold ornaments [Image by: Md. Abdus Salam]

রানী বেগমের বেশ কিছু এমন কানের দুল রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের যখন কোনো দূদর্শা হয়, বা আর্থিক অনটন হয়, তখন এই অলংকার অনেক উপকারে আসে। যেহেতু অলংকারগুলো আমাদেও কাছেই থাকে তাই আমাদের পরিবারের পুরুষেরাও আমাদের কিছুটা সম্মান দিয়ে থাকে। আসলে আমাদের সম্পদগুলো সুরক্ষার কাজটি আমরা নারীরাই করে থাকি। হয়ত এজন্যই আমাদের নিজেদের সমাজে নারীদেও সম্মান ও স্বাধীনতা কিছুটা বেশি, স্মীত হাসিতে একথা বলেন রানী বেগম।  

আসলে সর্দার সম্পদ্রায়ের নারী ও পুরুষ উভয়েই বেশ স্বাধীন এবং স্বাবলম্বী। তাদের তাদের যা কিছু প্রয়োজন হয় তার সবই তারা যোগাড় করে নদীর পানিতে ভাসমান নৌকা ঘরের জন্য। তারা বেশ দরিদ্র কিন্তু সকল সম্বল যেমন রান্নার পাত্র, বিছানা, বালিশ, চেয়ার, এমনটি ছোট শেলফ – এর সবই তারা চমৎকার করে নিজেদেও নৌকাঘরেই সাজিয়ে রাখে।

sardar family in boat
The boat homes of the Sardar host all their supplies, from food to medicine [Image by: Md. Abdus Salam]

ডাঙ্গার বাসিন্দাদের কাছে আগন্তুক সর্দাররা

সর্দার সম্প্রদায়ের মানুষদের নিচু জাতের বলে মনে করেন নদীর পাড়ে মূল ভূখন্ডে বা ডাঙ্গায় বসবাসকারী জনগণ। মূল ভূখন্ডের এই মানুষরাই সর্দার পরিবারগুলোর সাথে মাছের ব্যবসা করে থাকে। নদী থেকে আহরণ করা মাছগুলো সর্দারেরা ডাঙ্গার লোকের কাছেই বিক্রি করে থাকে। এখানে কেবল দু-পুক্ষের মধ্যে আর্থিক সম্পর্কটাই বিবেচ্য হয়, সেখানে আত্মীয়তা বা অন্য কোনো সম্পর্কের স্থান নেই। নৌকায় বসবাস করা এই মানুষেরা ডাঙ্গার মানুষের সাথে কোনো ধরনের বৈাবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেনা। 

স্লুইস গেটের পাশের খালে আশ্রয় নেয়া এই সর্দার পরিবারগুলোর নেতা আলিফ। তিনি বলেন, আমরা জানি যে নদীর বাইরে ডাঙ্গার মানুষেরা আমাদের নিচু জাতের মনে করে। কিন্তু বাস্তবেই তাদের সঙবেগ আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। সর্দার পরিবারের মানুষেরা তাদের দোকান থেকে চাল, ডাল, লবনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় তৈজসপত্র সংগ্রহ করে থাকে। আর অপরদিকে ওই্ সমাজের মানুষেরা সর্দারদের কাছ থেকে সংগ্রহ কওে নদীর মাছ। দু’পক্ষের মধ্যে এটুকুই লেনদেনের সম্পর্ক।

sardar family in boat, bhola river
The boats are the pride and joy of the Sardar, and nobody steps upon one with shoes on [Image: Md. Abdus Salam]

নিজেদের একমাত্র আশ্রয় এই নৌকাগুলো তারা খুব যতেœর সাথে সাজিয়ে রাখে। নৌকাগুলোতে নানা ধরনের রংয়ের নকশা আঁকতে তারা কাঠের উপরে খোদাই করে। অনেকেই নৌকার দেয়ালে আলপনাসহ বিভিন্ন রঙের বিমূর্ত চিত্র অংকন করে। নিজেদের পায়ের জুতো বাইরে রেখে  তারা নৌকার ভিতরে প্রবেশ করে।

solar panel on boat Bhola river
Small solar panels on boats help recharge mobile phones [Image: Md. Abdus Salam]

সম্প্রতি একটি বেসরকারী সংস্থা এই পরিবারগুলোকে কিছু সোলার প্যানেল প্রদান করেছে। গ্রামের প্রধান আলিফ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, এই প্যানেলগুলোর মাধ্যমে আমরা আমাদেও মোবাইল ফোনগুলোকে চার্জ করে নিতে পারি।

নৌকায় বাস করে কোনো গৃহপালিত পশু পালন সম্ভব নয়, তবে এদের প্রতিটি পরিবারই পায়রা বা কবুতর পালন করে। পায়রা হচ্ছে শান্তি ও স্বাধীনতার প্রতীক।

b
Almost every boat boasts a dovecote [Image: Md. Abdus Salam]

ভোটার, তবে সহায়তা বঞ্চিত 

বর্তমানে নৌকাবাসী এই জেলে পরিবারগুলোর প্রায় সকল প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির রয়েছে জাতীয় পরিচয় পত্র। বছর বছর তারা নির্বাচনে ভোট প্রদানও করে থাকে। কোনো ব্যক্তির একটি স্থায়ী ঠিকানা না থাকলে তিনি আসলে ভোটার হতে পারেন না। কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা তাদের নিজেদেও স্বার্থে এই মানুষগুলোকে ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে কাজ করে। মোহাম্মদ ইউনূস বলেন, যখন নির্বাচন আসে তখনই নৌকাবাসী জেলে পরিবারের মানুষগুলো এই ‘গুরুত্বপূর্ণ’ মানুষদের দেখা পায়। আমরা নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব পালন করি, নির্বাচনের জন্য আমরা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান করি। কিন্তু নির্বাচনের পরে আর কেউই আমাদের খোঁজ নেয়না। নির্বাচনের পরে কেউ কোনোদিন আমাদের অধিকারগুলো আদায়ে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসে না। নির্বাচনের পর আর কেউই এই দিকে আসেনা।

আমাদের এই সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা কিংবা পয়:নিষ্কাশন সুবিধা প্রদানে কারো কোনো আগ্রহ নেই। এই প্রতিবেদন তৈরির সময় স্লুইস গেটের পাশে আশ্রয় নেয়া বিভিন্ন বয়সের প্রায় ৫০ জন শিশুর সাথে দেখা হয় এই প্রতিবেদকের। এই শিশুদের কেউই কখনও স্কুলে যেতে পারেনি।

এখানকার একন জেলের নাম সালাম মিয়া। তিনি বলেন, আমাদের পরিবারের ছেলেগুলো যখন বয়সে বড় হয়, তারা একে একে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মতো মাছ ধরার পেশাতে যুক্ত হয়। আর মেয়েদেও বিয়ে হয়ে যায়। এটাই আমাদের শিশুদের ভাগ্যের লিখন। 

From birth to marriage to death, everything happens on the boat [Image: Md. Abdus Salam]
From birth to marriage to death, everything happens on the boat [Image: Md. Abdus Salam]

ষোল বছরের রুপসা বেগম নৌকার পাশেই তার শিশুকে স্নান করাচ্ছিলেন। ১৪ বছর বয়সেই তার বিয়ে হয়ে যায়। তিনি বলেন, আমাদের এখানে বাল্যবিবাহ একটি সাধারণ ঘটনা। এখানে প্রতিটি বিবাহিত দম্পতিরই কমপক্ষে তিন থেকে চারটি সন্তান রয়েছে। 

রুপসা বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা যদি শিক্ষার সুযোগ পেতো তাহলে হয় আমাদেও পরিবারগুলোতে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা যেত। 

শিক্ষার পাশাপাশি ভোলার এই সর্দার পরিবারগুলোর নেই স্বাস্থ্যসেবা ও উপযুক্ত পয়: নিষ্কাশন ব্যবস্থা। নিজম্ব কিছু পদ্ধতিতে তারা নিজেদের ছোটখাটো রোগ-শোকের চিকিৎসা করে থাকেন। তবে জরুরী সাধারণ কিছু সমস্যা যেমন পেটের পীড়া, বা জ¦রের জন্য কিছু সাধারণ ওষুধ তারা নৌকায় সংগ্রহে রাখেন। আশেপাশে কোনো ওষুধ বা ফার্মেসী থেকে তারা এই ওষুধ যোগাড় করে রাখেন। এদেও মধ্যে বেশিরভাগই জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি অবলম্বন করেন না। পরিবারগুলোর বেশিরভাগ সন্তানই নৌকার ভিতরেই জন্ম গ্রহন করে থাকে।  

With no access to health and sanitation infrastructure, women give birth to and raise children on the boats [Image: Md. Abdus Salam]
With no access to health and sanitation infrastructure, women give birth to and raise children on the boats [Image: Md. Abdus Salam]

নৌকাবাসী জেলে পরিবারগুলোর নারী সদস্যরা পর্যাপ্ত টয়লেট না থাকায় নানাবিধ সমস্যা সবচেয়ে বেশি ভোগ করেন। জোৎস্না বেগম এখানকার একজন গৃহবধু। তিনি বলেন, পরুষ মানুষ যখন তখন বাইরে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে পারে। কিন্তু নারীরা রক্ষণশীলতা বজায় রাখতে খুব সকালে টয়লেট কার্যাদী সম্পন্ন করে। দিনের বেলা আমরা সাধারণত টয়লেটে যেতে পারিনা। আর মাসিকের সময় আমরা পুরোনো কোনো কাপড় বা ন্যাকড়া ব্যবাহার করি।

আসে ঝড়, তবে মেলেনা সহায়তার স্পর্শ   

এই মানুষগুলোর কাছে প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো যেন কাটা ঘায়ে সুসের ছিটা। গত দেড় দশকে বাংলাদেশের উপর দিয়ে সিডর, আইলা, আম্ফানের মতো বড় বড় ঘুর্ণিঝড় তা-ব চালিয়েছে। সাম্প্রতিক ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের সময় এই পরিবারগুলোর অনেকগুলো নৌকা ধ্বংস হয়েছে। ডাঙ্গায় বসবাস করা অনেক জেলে সরকারীভাবে আম্ফানের পর সহায়তা পেলেও সর্দার পরিবারগুলো চোখের আড়ালেই থেকে গেছে। 

রুস্তম সর্দার বলেন, এখানে কোনো বড় ধরনের ঝড়ের খবর পেলে আমরা আশেপাশে নিরাপদ কোনো আশ্রয়ে চলে যাই। এতে আমাদের প্রানটা কোনোরকম বেঁচে যায়। কিন্তু আমাদের একমাত্র আয়ের উৎস হচ্ছে আমাদের নৌকাগুলো। ঝড়ের কারনে এই নৌকাগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়। ঝড় থেমে গেলে আমরা নিজেদের নৌকা মেরামত করার কাজ শুরু করতে হয়। কিন্তু আমাদেও এই বিরাট ক্ষতি কাটিয়ে নিতে কেউ কখনও এগিয়ে আসেনা।  

Bhola river boat damaged by storm.
Boats are damaged by storms and no assistance comes. [Image: Md. Abdus Salam]

বাংলাদেশের গ্রামীন অর্থনীতিতে ক্ষুদ্রঋণের একটি বিরাট ভূমিকা থাকলেও নৌকাবাসী এই জেলে পরিবারগুলোর মেলে না কোনো ঋণ সহায়তা। 

 ভোলা বাংলাদেশের একমাত্র দ্বীপ জেলা। নদী পথে রাজধানী ঢাকা থেকে এই জেলার দুরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটার। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় নৌকাবাসী এই জেলে সম্প্রদায় যেন ভিন্ন কোনো গ্রহের বাসিন্দা। সরকারের যে কোনো সহায়তার সুযোগ তাদেও জীবনে অধরাই রয়ে যায়। কেবল একটি জাতীয় পরিচয় পত্রই তাদের সরকারী কোনো সেবার প্রতিনিধিত্ব করে!

জাতীয় পরিচয় পত্রের কতা জানতে চাইলে মোশারফ সর্দার ছুটে গেলেন তার নৌকায়। এক দৌড়ে নিজের জাতীয় পরিচয় পত্রটি নিজের ঘর থেকে নিয়ে এসে বললেন, আমি এই কার্ডটিকে কুব যত্ন করে রাখি। এটি আমাকে এখন একটি পরিচয় দিয়েছে সমাজে। হয়ত এই কার্ডেও বদৌলতে আমি এখন কোনো সুবিধাই পাচ্ছিনা। তবে আমার মনে হয় একদিন ঠিকই আমরা এর সুবিধা পাবো। দক্ষিন এশিয়ার বহু দেশেই পরিচয় পত্রের চিরাচরিত কিছু ভুলের মতোই মোশারফের পরিচয় পত্রে নাম লেখা হয়েছে ইংরেজী ভাষায়। আর তাতে নামের বানানটি কিঞ্চিৎ ভূল বা ভিন্ন ভাবে লেখা হয়েছে।

বর্ণীল তবে আটোসাটো পরিবেশে বাস করা সর্দার পরিবারগুলো আরো হাজারো সমস্যার পাশাপাশি এখন জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের শিকার। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারনে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে লবনাক্ততার প্রভাব বেড়ে চলেছে। ভোলা জেলা যা কিনা এই নৌকাবাসী জেলেদের বিচরণভূমি দেশের আরো ১৯টি উপকূলীয় জেলাগুলোর একটি। আর মেঘনা নদীই বিশাল জলরাশি হচ্ছে এই জেলেদের আবাস। প্রমত্তা মেঘনা গিয়ে মিশেছে বঙ্গোপসাগরে। জেলেরা বলছেন, নদীতে ধীরে ধীরে মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। 

রুস্তম সর্দার বলছিলেন, আগে নদীতে যখন তখন নামলেই আমরা মাছ পেতাম। এখন আর সেখানে আগের মতো মাছ নেই।

হঠাৎ করেই যেন কেমন সব পরিবর্তন হয়ে গেল। খুব আশংকার বিষয় আমাদের জন্য, হতাশা ভরা কন্ঠে রুস্তম বলেন।

অনুবাদ: আরিক গিফার

একটি মন্তব্য যোগ করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.