বন

স্থানীয় ও বিশেষজ্ঞদের মতে উপকূল রক্ষায় ম্যানগ্রোভ ও বাঁধ উভয়ই প্রয়োজন বাংলাদেশে

দেশের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা উপকূলীয় অঞ্চল রক্ষার সর্বোত্তম উপায় নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে, তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন যে তাদের উভয় বিকল্পেরই প্রয়োজন
বাংলা
<p>বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা জেলার অন্তর্গত কয়রা উপ-জেলার একটি ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ (ছবি: গৌরাঙ্গ নন্দী)</p>

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা জেলার অন্তর্গত কয়রা উপ-জেলার একটি ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ (ছবি: গৌরাঙ্গ নন্দী)

বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার মথুরাপুর গ্রামে বাড়ি নটোবর মালোর। নদীর একেবারেই কাছে নিজের বাড়ি থাকায় খুবই বিপদের মুখে থাকতে হয় তাদের। নদীর ধারে বন্যা থেকে সুরক্ষার জন্য যে বাঁধ দেয়া হয়েছে সেটি প্রতিবছরই মারাত্বকভাবে ভাঙ্গন আর ক্ষয়ের শিকার হয়। তাই এই ক্ষয় রোধে নটোবর মালো প্রতি বছর তার বাড়ির পাশে ম্যানগ্রোভ গাছ লাগান। কিছু চারা মারা যায়, কিন্তু কিছু চারা বেঁচে থাকে। ভাঙ্গনের হাত থেকে নিজের বাড়ি রক্ষা করতে তাকে ম্যানগ্রোভের যত্ন নিতে হয়।

নটোবরের বাড়ির ঠিক আরপাঙ্গাশিয়া নদীর তীরে। নদীটি এখান দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে জোয়ার বেশি হওয়ায় দিন দিন নটোবর মালোর বাড়িটি বাঁচানো আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। কিন্তু বাস্তুভিটা তো বাঁচাতেই হবে। তাই ক্রমাগত চেষ্টা  চালিয়ে যাচ্ছে মালো। তাদের বাড়ির আরেক দিকেই মালঞ্চ নদী – এটি গঙ্গার একটি শাখা নদী। মালঞ্চের তীরেই বিশ্বের  বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের অবস্থান। তাই অতিরিক্ত কোনো চেষ্টা ছাড়াই নটোবর মালো জঙ্গল থেকে ম্যানগ্রোভের চারা সংগ্রহ করতে পারেন। তেমন বেগ পেতে হয়না।

সরকার অবশ্য উপকূল রক্ষায় ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। বাংলাদেশের ১৩টি উপকূলীয় জেলায় ৫,৮১০ কিলোমিটার দীর্ঘ মাটির বেড়িবাঁধ নির্মান। এটি দীর্ঘ বাঁধ ১৯৬০ সালে উপকূলীয় বাঁধ প্রকল্প (সিইপি) এর অংশ হিসাবে নির্মান করা হয় যা পরবর্তীতে  উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পে (সিইআইপি) রূপান্তরিত হয়।

কিন্তু বেড়িবাঁধে ফাটল বা ভাঙ্গন এখানে একটি নিত্য সমস্যা। পরিস্থিতি আরও খারাপ পর্যায়ে যায় যখন একটি বড় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়ের পরই বাঁধের বিভিন্ন অংশ ভাঙ্গে। ২০০৯ সালে দেশের দক্ষিন-পশ্চিমের তিনটি উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা এবং বাগেরহাট  ঘূর্ণিঝড় আইলার কারনে ৬৮৩ কিলোমিটার এবং২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের সময় ৪৭৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মারাত্মকভাবে ক্ষয়-ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

একটির পরিবর্তে অপরটি নয়, প্রয়োজন উভয় পদ্ধতির প্রয়োগ

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাড়ছে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা। ফলে উপকূলীয় এলাকায় বন্যা ও ভাঙনের ঘটনা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় বহু দিন ধরেই নীতিনির্ধারক, বিশেষজ্ঞ, সুশীল সমাজ এবং উন্নয়ন সংস্থাগুলোর মধ্যে এখানকার ভূমি রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ বনাম ম্যানগ্রোভ সৃজন নিয়ে চলছে বিতর্ক। অনেকেই বলছেন  ম্যানগ্রোভ সৃজনের ফলে মাটি সুরক্ষিত হয়।

সিইআইপি প্রকল্পের আওতায়, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশের সরকারি সংস্থা পানি উন্নয়ন বোর্ড (বিডব্লিউডিবি) খুলনা ও বরিশালে বাঁধ মেরামত ও শক্তিশালী করতে ৩২.৮  বিলিয়ন টাকা (৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) মূল্যের একটি প্রকল্প পরিচালনা করছে।

পাশাপাশি সরকার সুন্দরবনের চারপাশের নদীর তীরবর্তী বাঁধ এলাকায় ম্যানগ্রোভ সৃজনের একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করেছে। বিষয়টি এগিয়ে নিতে বেশ কিছু  বেসরকারি সংস্থাও ম্যানগ্রোভ রোপণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

এ অবস্থায় উপকূল রক্ষায় সরকারের বাঁধ, না বাদাবন (ম্যানগ্রোভ) কোনটি নিয়ে কাজ করা উচিত? কিংবা উপকূল এলাকার সম্পদ আর জনগনের নিরাপত্তার কথা ভেবে উভয় ব্যবস্থাই গ্রহন করা উচিত, এ নিয়ে তর্ক অনেক দিনের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং ম্যানগ্রোভ গবেষক মাহমুদ হোসেন দ্য থার্ড পোলকে বলেন, “ম্যানগ্রোভ মাটির বাঁধকে রক্ষা করে, বিশেষ করে সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে।” “এই নদীগুলো উজান থেকে প্রচুর পরিমানে পলি বহন করে। ম্যানগ্রোভ গাছের শিকড়গ এই পলিকে আটকে রেখে  বাঁধগুলোকে শক্তিশালী করে। আমরা যদি সুশৃঙ্খলভাবে উপকূলজুড়ে ম্যানগ্রোভ রোপণ করতে পারি, তাহলে প্রতি বছর বাঁধ মেরামতে এত বেশি অর্থ খরচ করতে হতো না।”

একই অভিমত প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক দিলীপ কুমার দত্ত। তিনি বলেন, “যদি আমরা এই পুরো এলাকায় বাঁধের পাশে ম্যানগ্রোভ বনায়ণ করতে পারি, তাহলে তা নদী তীরের বসতবাড়ি আরো ভালোভাবে রক্ষা করতে পারবে।” ““ভৌগলিকভাবে ব-দ্বীপ বাংলাদেশের প্রায় ৬,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনভূমি সুন্দরবনের অবস্থান। গঙ্গা এবং এর উপনদীগুলো বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মেশার পথে নিজেদের প্রবাহের সাথে প্রচুর পরিমানে পলি  বহন করে এনে এই সমভূমির সৃষ্টি করেছে। কিন্তু বাঁধ নির্মাণের সময় এই নদীর এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। পলি বেড়িবাঁধ অতিক্রম করতে পারে না, তাই সেগুলো নদীর তলদেশে জমা হচ্ছে। অন্যদিকে বাঁধের অন্যপাশে পানি আটকা পড়ছে কৃষি জমিতে। পাশাপাশি এই বাঁধগুলো চিংড়ি চাষ আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

উপকূলীয় জেলাগুলোতে ৫,০০০ কিলোমিটারের বেশি বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ৩০০ কিলোমিটার বা তার বেশি জুড়ে ম্যানগ্রোভ সৃজন করা হয়েছে।
এ কে এম তাহমিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড

সিইআইপি প্রকল্পের অধীনে কিছু কিছু এলাকায় ম্যানগ্রোভ বনায়ন শুরু হয়েছে, যেমন খুলনা জেলায় ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এলাকায় ম্যানগ্রোভ সৃজন চলছে। অন্যদিকে সাতক্ষীরা জেলায় বাঁধের পাশে রোপণের জন্য বন বিভাগ থেকে ৫০ হাজার চারা পেয়েছে বিডব্লিউডিবি।

“বাংলাদেশ সরকারের বন বিভাগের সামাজিক বনায়ন বিভাগের (বাগেরহাট) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এসএম সাজ্জাদ হোসেন দ্য থার্ড পোলকে বলেন, “আমরা সিইআইপির অধীনে  বাঁধের উপরে ১০০ কিলোমিটারের বেশি ম্যানগ্রোভ বনায়ন করেছি। আমরা বাঁধ ও নদীর মাঝখানে ম্যানগ্রোভ এবং বাঁধের অন্য ঢালে অন্যান্য প্রজাতির গাছ লাগাচ্ছি।”

পিছিয়ে পড়ছে বৃক্ষরোপন

উপকূলীয় এলাকায় বাঁধের নিয়ন্ত্রণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের জন্য দায়িত্বে থাকে বিডব্লিউডিবি। এই বিভাগের  দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম তাহমিদুল ইসলাম বলেন, ম্যানগ্রোভ দিয়ে সমস্ত বাঁধ মজবুত করার আগে আসলে আমাদের আরো বেশ কিছু কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, উপকূলীয় জেলাগুলিতে ৫,০০০  কিলোমিটারের বেশি বেড়ি বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে, ৩০০ কিলোমিটার বা তার বেশি জুড়ে ম্যানগ্রোভ রোপণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এখন থেকে ম্যানগ্রোভ রোপণ সমস্ত বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত প্রকল্পের অংশ হিসেবে বলবৎ থাকবে। “নানা কারনে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাচ্ছে; আমরা তাদের মেরামত করে যাচ্ছি। শুধু খুলনা এলাকায়ই ১০০  কিলোমিটারের বেশি বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৭  কিলোমিটার অরক্ষিত এবং ১৭ কিলোমিটার এলাকা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সেগুলো মেরামত করা জরুরি।”

চিংড়ি চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উপকূল রক্ষা বাঁধ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর শহরের আতরজান মহিলা মহাবিদ্যালয় কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহী দ্য থার্ড পোলকে বলেন, “মানুষ প্রায় ৬০০ বছর ধরে এই অঞ্চলে কৃষিকাজ করে আসছে; বন্যা এবং অধিক জোয়ার সব সময় এখানকার প্রধান সমস্যা ছিল। [জুন থেকে সেপ্টেম্বর] বর্ষার আগে মানুষ তাদের খামারে বিশুদ্ধ পানি ধরে রাখার জন্য অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করত। এখানে ম্যানগ্রোভগুলি নিজেরাই বেড়ে উঠত তারা মাটিকে একত্রে ধরে রাখত।”

যেহেতু উপকূলের পানি এবং মাটি ক্রমশ লবণাক্ত হয়ে উঠছে এবং কৃষকদের জন্য প্রথাগত ফসল, বিশেষ করে ধান চাষ করা আরও বেশি কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই সাম্প্রতিক দশকগুলিতে এই অঞ্চলে লোনা-পানিতে চিংড়ির চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। বারবার অভিযোগ উঠেছে যে চিংড়ি চাষীরা বেড়িবাঁধ দিয়ে ড্রিল করে তাদের খামারে নোনা পানি বয়ে আনছে।

Tএই অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেন সাতক্ষীরা জেলার মুন্সীগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা পীযূষ বাউলিয়া। তিনি বলেন, চিংড়ি চাষের জন্য এই এলাকার বাঁধগুলো নির্বিচারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা কেবল বাড়ছেই। আর তাই বাঁধ টিকছে না।

খুলনা জেলার কয়রার বাসিন্দা ইমতিয়াজউদ্দিনও এ ব্যাপারে সহমত প্রকাশ করেন। তিনি জাগ্রতো যুব সংঘ নামে স্থানীয় একটি বেসরকারী সংস্থার ২০০৭ সালে পরিচালিত এক জরিপের কথা উল্লেখ করে বলেন, “শুধুমাত্র এই [কয়রা] উপ-জেলার মধ্যে ৫০০ টিরও বেশি জায়গা খুঁজে পেয়েছিল জাগ্রত যুব সংঘ যেখানে বাঁধ ভিতর দিয়ে পাইপ ড্রিল করে লবন পানি জমির ভিতরে নেয়া হয়।”

স্থানীয়দের চাহিদা আরো মজবুত ও উঁচুবাঁধ

বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার পর থেকে আরও শক্তিশালী এবং উচু বাঁধের দাবি করে আসছে। এই দাবী ২০২০ সালে ঘটা  ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এবং ২০২১ সালে ঘটা ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর পরে আরো জোরদার হয়। এই ঘূর্ণিঝড়গুলোর পর বহু মানুষ যথােপযুক্ত বাঁধের অভাবে দিন দিন হতাশ হয়ে পড়ে। কারন বহু বাসিন্দাকে ঘূর্ণিঝড়ের পর নিজেদের বসত ভিটা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হতে হয়।  কয়রা এলাকার দক্ষিণ বেদকাশি গ্রামের বাসিন্দা হযরত আলী বলেন, নদীগুলি এখানে প্রচুর পরিমানে পলি বহন করে, যা নদীর তলদেশে জমা হয়। তাই নদীর তল উঁচু, অন্যদিকে বাঁধের ওপারে বসতিও  কম। বন্যার পানি আটকে যায় এবং আমরা ডুবে মরি। বেড়িবাঁধ না উঠলে আমাদের বাঁচার কোনো উপায় নেই।

An embankment in coastal Bangladesh, Gouranga Nandy
স্থানীয় সরকার কয়রায় এই বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করছে, যা ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এবং ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় জলোচ্ছ্বাসের কারনে ভেঙ্গে গিয়েছিল (ছবি: গৌরাঙ্গ নন্দী)

ঢাকার বেসরকারী ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চের ইমেরিটাস প্রফেসর এবং বাংলাদেশের অন্যতম পানি বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত দ্য থার্ড পোলকে বলেন, আমাদের উপকূলীয় এলাকাগুলো বেড়িবাঁধ ছাড়া বাঁচানো যাবে না। কিন্তু বেড়িবাঁধ খুব উঁচুতে তোলা যায় না। বাঁধগুলি অক্ষত রেখে  কিছু সমুদ্রের পানি উপকূলীয় অঞ্চলে আসতে দিতে হবে। এর জন্য ম্যানগ্রোভ বাগান সম্প্রসারণ করতে হবে।

তিনি বলেন, যেখানে সম্ভব হয় কিছি কিছু স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে তাদের ভিতরের অংশে পলি ফেলে মাটির স্তর বাড়াতে যেতে পারে। একে বলা হয় জোয়ার-ভাটা নদী ব্যবস্থাপনা, যা একটি কার্যকর অভিযোজন কৌশল [জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করার জন্য।

তবে উপকূলীয় এলাকায় ম্যানগ্রোভ সৃজন বৃদ্ধি করা ভালো বলে মন্তব্য করেন ভারতের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের শিক্ষক সুনন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, কেবল ম্যানগ্রোভ বন্যার পানিকে দূরে রাখতে পারে না, বিশেষ করে যখন ঘূর্ণিঝড়ের সময় মাত্রা বেশি থাকে, তখন।

অতএব, সার্বিক পর্যালোচনায় একটি বিষয়ে সকলেই একমত হয়েছেন, আর তা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলােকে বাঁচাতে বাঁধ ও ম্যানগ্রোভ উভয়কেই আমলে নিয়ে কাজ করতে হবে – প্রয়োজন দু’টিরই।